spot_imgspot_img

শরবতের ব্যবসায় বাজিমাত

রাশেদ মোজাম্মেল, মোঃ কাউছার আহমেদ এবং সুদীপ্ত রঞ্জন রাজিব এই তিন বন্ধু মিলে একদিন রাজধানীর ঝিগাতলায় শরবতের দোকান দিয়ে বসলেন। এদের মধ্যে একজন ঢাকা বিশ্বদ্যালয়ে পড়ছেন,একজন একই বিশ্ব্যদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করেছে আর অন্যজন পড়ছেন একটি স্বনামধন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে।

 

এত ভালো ভালো জায়গায় পড়াশোনার পাশাপাশি কেন ভিন্নধর্মী এই উদ্যোগ তারা নিলেন এর পেছনের গল্প বললেন রাশেদ মোজাম্মেল। তিনি বলেন, একবার তার জন্ডিস হয় কিন্তু জন্ডিসের জন্য দরকারি মানসম্মত আখের রস তিনি তেমন কোথাও খুঁজে পাননি। মানসম্মত ও আসল ফলের জুস খেতে হলে দামী জুসবার বা রেস্টুরেন্ট ছাড়া কোন গতি নাই। যা অনেক সময় সাধারন মানুষ ও মধ্যবিত্তদের হাতের নাগালের বাইরেই রয়ে যায়। এই মান সম্মত  শরবত নিয়ে তিনি ভাবতে শুরু করেন।  হুট করে তখন মাথায় আসল কিছুদিন আগে পড়া একটি বইয়ের কথা। উদ্যোক্তাদের নিয়ে নিয়মিত কাজ করা একজন লেখক মুনির হাসানের বই ‘শরবতে বাজিমাত’। এই বইটিতে তিন জন বন্ধুর  মানসম্মত শরবত বিক্রি করে ধনী হবার গল্প উঠে এসেছে। যেখানে গুনগত মান ঠিক রেখে তারা তাদের ব্যবসা সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়।

এই বইটি তখন বাংলদেশের এই তিন তরুণের জন্য উদাহরণস্বরূপ হয়ে দাড়ায়। এরপর তারা শরবত নিয়েই ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা করে। অবশ্যই সেটার গুনগত মান বজায় রেখে ও মধ্যবিত্তদের ক্রয়সীমার মধ্যে থাকে সেটা নিয়ে তারা কাজ শুরু করে। সমাজের নানা মানুষ নানা কথা বললেও তারা তাদের ব্যবসা শুরু করে।

 

তাদের ভাষ্যমতে,  বাংলাদেশে এ বিশুদ্ধ আখের রস পাওয়া যায় না বললেই চলে। অপরিচ্ছন্ন ভাবে আখের রস বের করা, দূষিত পানি দিয়ে তৈরি বরফ এর মিশ্রণ, এবং স্বাস্থ্যহানির কথা চিন্তা করে অনেকেই  রাস্তার উপরের আখের রস খেতে চায় নাহ। সেই বিষয় টি মাথায় রেখে বিশুদ্ধ আখের রস কিভাবে মানুষের নাগালের ভিতর নিয়ে আসা যায় সেটি নিয়েই কাজ করে যাচ্ছেন তারা।

তারা তাদের তৈরি জুস তাদের দোকানে বিক্রির পাশাপাশি অর্ডার নিয়ে বাসায় বাসায় ডেলিভারিও দেয়। এক্ষেত্রে ফুডপান্ডা ও সহজ তাদের জুস ডেলিভারির কাজ করে। বোতলবন্দী করার ২৪ ঘন্টার মধ্যে সেটি খেয়ে ফেলতে ওরা উৎসাহ দেয় কারণ ওরা কোন প্রিজারভেটিভ দেয় না। একেবারেই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে  তৈরি এই শরবত।

তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম আখের রস এন্ড জুস বার। বর্তমানে ধানমন্ডি জিগাতলায় তাদের একমাত্র শাখা।

তাদের শরবতের মধ্যে দেশীয়, সিজনাল ফলের জুসের পাশাপাশি কোল্ড কফি, লাচ্ছিও পাওয়া যায়। এছাড়া আখ দিয়েই তাদের আছে প্রায় ১৮/১৯ ধরনের শরবত।

তাদের দোকানে আখ, আম, ড্রাগন ফল, পেপে, আপেল, কলা, আনারস, জাম সহ নানা ধরনের ফ্রেশ ফলের জুস পাওয়া যায়। তাদের জুসের দামটাও অনেক আকর্ষনীয় ও ক্রয়সীমার মধ্যে।

 

প্লেইন আখের জুস ২০ টাকা থেকে শুরু হয়। এছাড়াও আছে সুইট অরেঞ্জ কেইন শেক ( ৩৫ টাকা ),লেম  গ্রাস কেইন (৩০ টাকা),ব্যানানা কেইন শেক (৪০টাকা), গ্রেপ্স উইথ মিন্ট (৩৫টাকা), গ্রেইপ্স কেইন শেক( ৩৫ টাকা), কেইন স্ট্রবেরি(৪৫ টাকা), পিনাট  চেরি কেইন শেক (৫০ টাকা), কোকো কেইন শেক ( ৬০ টাকা), পিনাট ডেইট কেইন শেক ( ৬০ টাকা) সহ নানা বাহারি স্বাদের ও ফলের জুস।

 

ভবিষ্যতে তাদের আরো কিছু আখের রস এন্ড জুস বার এর শাখা খুলতে চায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এরিয়া সহ আরো বেশ কয়েকটি জায়গায় তারা কিছু দিনের মধ্যেই তাদের শরবতের দোকানের শাখা খুলবে।

অনলাইনে তাদের জুস অর্ডার ও কার্যক্রম ফলো করার জন্য তাদের ফেসবুক পেজের লিংক হলোঃ https://www.facebook.com/sugarcanejuicebd/

 

Get in Touch

Comments are closed.

spot_imgspot_img

Related Articles

spot_img

Latest Posts