উদ্যোক্তা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার জন্য কক্সবাজার থেকে চলে এসেছেন নাঈমা পারভীন অনামিকা। একবার খালি গলায় এবং একবার হারমোনিয়াম সহযোগে সমাবেশকে গান শুনিয়ে দিলেন তিনি। এভাবে ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের প্রায় দেড় শতাধিক নারী উদ্যোক্তার সমাবেশটি হয়ে উঠেছিল এক আনন্দ আড্ডা, প্রাণখোলা হাসি এবং ইচ্ছেমতো সেলফি-ছবির সমাবেশ।
বিশ্বের ১৪৪টি দেশের সঙ্গে ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে নারী উদ্যোক্তা দিবস ২০১৮। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের উদ্যোক্তার প্ল্যাটফর্ম “চাকরি খুঁজব না, চাকরি দেব” ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনোভেশন ও অন্ট্রপ্রিনিয়রশীপ বিভাগ যৌথ উদ্যোগে এই উদযাপনের আয়োজন করে।
বিকেল ৪টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে এক-দুই জন করে উদ্যোক্তারা আসতে শুরু করেন। কেউ কেউ তাদের পুত্র-কন্যাকে সঙ্গে এনেছেন। কেউ এনেছেন স্বামীকে। ড্যাফোডিলের সোবহানবাগ ক্যাম্পাসের লেবেল-৯ এর ব্যাংকোয়েট হলে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তাদের রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বিডিওএসএনের স্বেচ্ছাসেবকরা। নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা পেয়ে যান বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সৌজন্যে মুনির হাসান লিখিত “গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং” বই এবং আয়োজনের অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তাদের একটি ক্ষুদ্রকায় ডিরেক্টরি। গলায় নিজের নাম আর প্রতিষ্ঠানের ব্যাজ ঝুলিয়ে উদ্যোক্তারা নিমেষে একে অন্যের সঙ্গে মিশে যান।
এরপরই উদ্যোক্তারা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে আড্ডায় মেতে উঠেন। কাউকে কাউকে দেখা যায় লোগো বোর্ডের সামনে গিয়ে ছবি তুলতে। অনুষ্ঠানের ফটোগ্রাফি পার্টনার ল’ফটোর কর্মীদের এ সময় শশব্যস্ত হয়ে সবার ছবি তুলতে দেখা যায়।
এর মধ্যে আয়োজন স্থলে হাজির হয় নাড়ু, সিঙ্গারা, পাটিসাপটা পিঠাসহ খাবারের আয়োজন। শুরু থেকে ছিল কফির ব্যবস্থা। খেতে খেতে চলতে থাকে আলাপ। অনেকেই ‘পরানের বন্ধুর” সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরতিতে দেখা হওয়ায় জড়িয়ে ধরেন। এ সময় স্বামী মিজানুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানে আসেন অণুপ্রেরণার নারী উদ্যোক্তা কুসুম কলি সু স্টোরের নাজমা খাতুন। আসেন মাহজাবীরন ফেরদৌসের নেতৃত্বে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের একদল কর্মকর্তা। তাদেরকে পেয়ে অনেকেই কাজের আলাপও সেরে নেন। জুনিয়র চেম্বার কমার্সের পরিচালকরা উদ্যোক্তাদের তাদের চেম্বারে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। অনেক উদ্যোক্তা সঙ্গে করে উদ্যোগের পরিচিতি মূলক প্রচারপত্র এনেছেন। কেউ কেউ অন্যদের জন্য ছোট ছোট উপহার সামগ্রী নিয়ে আসেন।
নারী উদ্যোক্তা দিবসের অনুষ্ঠান হলেও এ আয়োজনে ভাবগম্ভীর কোন আলোচনা বা সেমিনার ছিল না। এমনকি কোন আনুষ্ঠানিক আয়োজনও ছিল না। এক পর্যায়ে আয়োজকরা তাদেরকে হলে গোল করে বসিয়ে দেন। সাজগোজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সিনথিয়া শারমিন ইসলাম সবার সঙ্গে সবার পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় প্রত্যেকে নিজের পরিচয় ও কাজের ক্ষেত্র তুলে ধরেন। পরে, তারা সবাই জড়ো হোন মঞ্চে। সে সময় তোলা হয় সবার একটি ছবি।
ছবি তোলার পর আবার সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আড্ডায় মশুগুল হয়ে পড়েন। এক ফাঁকে আবার গান শোনান নাঈমা পারভীন। অনুষ্ঠানের শেষ দিকে সবাই মিলে কেক কাটেন। এর পর আড্ডা আরও ঘরোয়া হয়ে উঠে। এ সময় অনেক উদ্যোক্তাকে “বাংলাদেশের মেয়ে” গানের সঙ্গে নাচতে দেখা যায়।
যাবার সময় সবাইকে আইপিডিসির পক্ষ থেকে সৌজন্য উপহার দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি উদ্যোক্তারা সঙ্গে নিয়ে যান চমৎকার একটি বিকেল-সন্ধ্যার অনুরণন।
এক নজরে আয়োজন
গোল্ড স্পন্সর : সাজগোজ
সিলভার স্পন্সর : এসকে কার্গো, ই-কুরিয়ার
সহযোগী: প্রথম আলো, ডেইলি স্টার
কৌশলগত পার্টনার: আইপিডিসি, জেসিআই, বিডব্লিউআইটি
ফটোগ্রাফী পার্টনার : ল’ফটো
মিডিয়া পার্টনার নাগরিক টিভি, সি-নিউজ, ঢাকা এফএম
পার্টনার : বিডিভেঞ্চার, ই-ক্যাব, বাংলাদেশ ভেঞ্চার লিমিটেড, এফ এম প্লাস্টিক
লোগো বোর্ড স্পন্সর : আফরাজান, বাহারিকা, বেণীফুড, ঢুলি ডট কম, দয়ীতা, ডেল্টা নেটওয়ার্ক সিস্টেম (ডিএনএস) সফট্ওয়ার লিমিটেড, ডিজিটাল পাওয়ার অ্যান্ড টেকনোলজি, ফিনারি, ফিল্ড ডট বাজ, গিগাটেক লিমিটেড, গ্রাম্পি ফিশ, গ্লোবাল ইমারজিং টেকনোলজি নেটওয়ার্ক, আইটিএসডি, জেরেভ কনসালট্যান্ট, কারুকথা, পিটিআরসি রিহ্যাব অ্যান্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টার, প্যানাচি হাব, লাফ এন লার্ন, কন্যা, ম্যাজিক রুটি মেকার, ওখানেই ডট কম, রেটরো কালারস, রঙিন মেলা, শৈলী, সিজনস্ বুটিক, শপ আপ ডট কম, শাওন ক্রাফট, সুরঞ্জনা, স্কীল জবস, তুরঙ্গমী, তাইকন, টান, আনস্টিচড, ভাইপার, ওয়াহেদ ভিএফএক্স, ঋতু, ওমেন এন্ট্ররপ্রিনিয়রস বাংলাদেশ ( উইবিডি )।