হাফিজা আক্তার রানী পড়াশোনা করেছেন ইংরেজি সাহিত্যে। চাকুরি করার ইচ্ছা থাকলেও পারিবারিক কারনেই দায়িত্ব নিতে হয় সংসারের। তাই অনার্স ২য় বর্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিলেন নিজে একটা কাজ করবেন, যাতে নিজের এবং অন্য নারীরাও যেন উপকৃত হন। শুরু করলেন রানী বুটিক এন্ড হ্যান্ডিক্রাফ্ট। শোরুম এবং কারখানাতে যুক্ত করলেন ৫ জন নারীকে। সাথে চালিয়ে গেলেন পড়াশুনা, সংসার এবং প্রশিক্ষন গ্রহন যেমন হাতের কাজ,ব্লক বাটিক, পাটজাত পন্য উৎপাদনসহ ব্যবসার বিষয়ে।
নিজের উদ্যোগের বাহিরেও তিনি “আত্মপ্রত্যয়ী মহিলা উন্নয়ন সমিতি” নামে একটি নারী সংগঠন করেন। যা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর হতে নিবন্ধিত। যেখানে ৫০ জন গ্রামীন নারী সদস্য রয়েছে। ২০১৭ সালে তিনি সমাজ উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখার জন্যে জয়িতা নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি তার কার্যক্রমকে প্রসারিত করতে উদ্যমী নারী যারা কিছু করতে চান তাদের নিয়ে শুরু করেন “আমরা পারি”।
আমরা পারি ৫ টি ক্যাটাগরী নিয়ে কাজ করে।
১.পন্য বা সেবা ২.প্রশিক্ষন ৩. নারী উদ্যোক্তা তৈরী ৪. নারী উদ্যোক্তা সমস্যা জরিপ ৫. সামাজিক কার্যক্রম।
১০০ নারীদের নিয়ে আমরা পারি কাজ শুরু করে। আমরা পারি বিভিন্নধরনের পরিবেশ বান্ধব পণ্য যেমন পাটের ব্যাগ, ম্যাট, ম্যাক্রাম ব্যাগ, নকশি কাঁথা, শাড়ি, থ্রি-পিস সেট এবং হাতের ছাপে তৈরি পোষাক তৈরি করেন। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য গ্রামীণ নারীদের টেকসই জীবিকার সুযোগ প্রদান করা যেখানে ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্প সংরক্ষণ এবং পরিবেশগত টেকসইতাকে উন্নীত করা।
আমরা পরীর অনন্য দিকগুলির মধ্যে একটি হল গ্রামীণ মহিলাদের ক্ষমতায়নের দিকে এটির ফোকাস৷ সংস্থাটি গ্রামীণ এলাকায় নারী কারিগরদের নিয়ে কাজ করে, তাদের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করে। এটি করার মাধ্যমে, আমরা পারি এই নারীদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়ন করতে সাহায্য করে, তাদেরকে তাদের পরিবারের আয়ে অবদান রাখতে এবং আর্থিকভাবে স্বাধীন হতে সক্ষম করে।
আমরা পারি উদ্যোগ নিয়ে হাফিজা আক্তার রানী বলেন, আমরা পারি এই উদ্যোগটিকে আমি শুধু মাত্র ময়মনসিংহের মধ্যেই আবদ্ধ করে রাখবো না, এটাকে দেশে এবং বিদেশেও ছড়িয়ে দিতে চাই যাতে করে পিছিয়ে পরা নারীরা আমরা পারিতে যুক্ত হয়ে এগিয়ে যেতে পারে।
২০২২ সালে “আনিসুল হক কোহর্ট ফর গ্রোথ অফ উইমেন অন্টাপ্রেনিউরস” সম্পর্কে জানতে পারেন এবং সেখানে আবেদন করে নির্বাচিত হন। কোহর্টের পুরোটা সময় বিভিন্ন সেশনে অংশ নেন এই উদ্যোক্তা।
আনিসুল হক কোহর্ট থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ তার ব্যাবাসকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করছে।
উল্লেখ্য, সাত মাসব্যাপী “আনিসুল হক কোহর্ট ফর গ্রোথ অফ উইমেন অন্টাপ্রেনিউরস”আয়োজিত হয় ঢাকার প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্মরণে গঠিত আনিসুল হক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) ও উদ্যোক্তাদের প্লাটফর্ম চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব গ্রুপ এর যৌথ উদ্যোগে। পার্টনার হিসেবে ছিল ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনোভেশন অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিওরশিপ বিভাগ, আনিসুল হক স্টাডি সেন্টার ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বাংলাদেশ।