উদ্যোক্তাদের সংগঠন ইও-বাংলাদেশ আয়োজিত আন্তর্জাতিক ছাত্র-উদ্যোক্তা পুরস্কার (জিএসইএ)-এর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত জাতীয় প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজিবা নায়লা ওয়াফা। নাজিবার উদ্যোগ, “রিসার্জেন্স” কচুরিপানা থেকে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা, “ইন্সপায়ার” এর প্রতিষ্ঠাতা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সামাজিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য প্রতিযোগিতায় রানার-আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। গ্লোবাল স্টুডেন্ট এন্টারপ্রেনার অ্যাওয়ার্ড (জিএসইএ) জাতীয় বিজয়ী মাকাও, চায়নাতে অনুষ্ঠিতব্য জিএসইএ গ্লোবাল ফাইন্যাল-২০১৯-এ ৪০,০০০ মার্কিন ডলারের পুরস্কার জয়ের লক্ষ্যে বিশ্বের শীর্ষ ছাত্র-উদ্যোক্তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
২৪ নভেম্বর, শনিবার জিপি উদ্যোক্তাদের সংগঠন ইও বাংলাদেশের আয়োজনে প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত পর্বের জুরি বোর্ডে ছিলেন আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম, গ্রামীণফোনের হেড অভ স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম মিনহাজ উদ্দিন আনোয়ার, আনোয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসাইন খালেদ ও বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) এর চেয়ারম্যান তাঁর বক্তব্যে বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী-উদ্যোক্তাদেরকে অভিনন্দন জানান এবং তরুণদের মননশীলতা, সৃষ্টিশীলতা এবং প্রত্যয় যে সুন্দর ভবিষ্যৎ আনতে সক্ষম সে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি ইও কে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানান ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরিতে গঠনমুলক এরকম একটি আয়োজনের জন্য।
জিএসইএ চেয়ার জেরিন মাহমুদ হোসেইন বলেন, ‘ইও বাংলাদেশ চতুর্থবারের মতো জিএসইএ জাতীয় প্রতিযোগিতা আয়োজন করলো। আমি বাংলাদেশের শিক্ষার্থী উদ্যোক্তাদের মধ্যে জিএসইএর প্রতি ব্যাপক উৎসাহ দেখে এবং তাদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে পেরে সৌভাগ্যবান বোধ করছি।’
ইও বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট ফারজানা চৌধুরী কৃতজ্ঞতা বক্তব্যে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের প্রতিভাবান ও মেধাবী নবীন উদ্যোক্তাদের সান্নিধ্যে ও উদ্ভাবনী চিন্তার সংস্পর্শে উচ্ছ্বসিত বোধ করছি। ইও বাংলাদেশ প্রতিজ্ঞা করছে যে বাংলাদেশের সকল তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি আমাদের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতা থাকবে”।
জিএসইএ জাতীয় বিজয়ী নাজিবা নায়লা ওয়াফা বলেন, ‘জিএসইএ আমার সামনে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এর সাথে সম্পৃক্ততা আমার প্রতিনিয়ত আরো শেখার ও জানার এক অ্যাডভেঞ্চার।“
অনুষ্ঠানটিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গ্রামীণফোন লিমিটেডের চিফ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড ট্রান্সফর্মেশন অফিসার জনাব কাজী মাহবুব হাসান এবং আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোমিনুল ইসলাম। বাংলাদেশের ২১জন শিক্ষার্থী-উদ্যোক্তা এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারের জন্য প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ জাতীয় সেমি-ফাইনালের মঞ্চে অংশগ্রহণ করে। তাদের মধ্যে থেকে ৫ জন ফাইনালে অংশগ্রহণ করে।
“গ্লোবাল স্টুডেন্ট এন্টারপ্রেনার অ্যাওয়ার্ড (জিএসইএ)” বিশ্বের ৬০টির বেশি দেশের ১৭,০০০ স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী-উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা। শিক্ষার্থীদেরকে পড়াশোনার পাশাপাশি নানা ধরণের উদ্যোগে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত এই প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করতে উদ্বুদ্ধ করে। সেইন্ট লুইস ইউনিভার্সিটির জন কুক স্কুল অব বিজনেস-এ ১৯৯৮ সাল থেকে প্রবর্তিত জিএসইএ নিয়মিত শিক্ষাগ্রহণের পাশাপাশি নিজের ব্যবসা পরিচালনা করছেন এমন উদ্যোক্তা শিক্ষার্থীদেরকে সম্মাননা প্রদান ও পুরস্কৃত করে আসছে। ২০০৬ সালে উদ্যোক্তা সংগঠন (এন্টারপ্রেনারস অর্গানাইজেশন) জিএসইএ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার্থী উদ্যোক্তাদের জন্য নির্দেশনা, যোগাযোগ ও সমূদয় সহযোগিতা প্রদান ও বিশ্বের প্রভাবশালী উদ্যোক্তা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে সহায়তা করে। উদ্যোক্তা সংগঠন (এন্টারপ্রেনারস অর্গানাইজেশন) পরিচালিত জিএসইএ টমাস ফ্রান্সিস সল্যুশন-এর পৃষ্ঠপোষকতা পায়।